সুমন্ত বড়াল: হুগলী শিল্পাঞ্চলের অন্যতম শহর রিষড়া । দেশের প্রথম চটকল এই শহরেই। বহুভাষা ভাষি মানুষের বাস এই শহরের বুকে । সব টাই গড়ে উঠেছে শহরের শিল্পাঞ্চল কে কেন্দ্র করে। আর কলকারখানায় ঘেরা এই শহরে দেবশিল্পীর আরাধনা হবে না তা কি করে হয় । বিশ্বকর্মা পুজোতে মেতে ওঠে এই শহরের অলিগলি কিন্তু এই শহরেই রয়েছে দেবশিল্পী বিশ্বকর্মা র মন্দির । সম্ভবত এই জেলার নিরিখে একমাত্র বিশ্বকর্মা মন্দির ।যেখানে প্রতিষ্টিত রয়েছেন বিশ্বকর্মা , আছে নিত্য পুজোর ব্যবস্থা । বিষড়া শহরের ব্যস্ততম রাস্তা ঋষি বঙ্কিম সরণি , এই সরণি র তে অবস্থিত এই মন্দির । লোকমুখে পরিচিত চার নম্বর গেট এলাকা তে অবস্থিত এই মন্দির। ১৯৭১ সালে স্থানীয় বিশ্বকর্মা অভ্যুদয় কেন্দ্রের উদ্যোগে স্থানীয় শ্রমজীবি মানুষের সহযোগীতায় গড়ে ওঠে এই মন্দির । সেই থেকে এই মন্দির পরিচালনার ভার বিশ্বকর্মা অভ্যুদয় কেন্দ্রেরই। প্রতিদিন সকাল সন্ধ্যা দুই বেলা পুজো অর্চনা হয় এই মন্দিরে।
তবে এই মন্দিরে দেবশিল্পীর বিগ্রহ টি বিশেষ উল্লেখ যোগ্য। এই মন্দিরের বিগ্রহ এর রূপ প্রাচীন দাড়িওয়ালা বিশ্বকর্মা মত , একটি সিংহাসনে আসীন, একটি পা অন্য ঊরুর ওপর তোলা, পায়ের কাছে একটি রাজহাঁস। আধুনিক বাংলায় আবির্ভূত, দাড়ি কামানো সুপুরুষ। ঠোঁটের ওপর সরু গোঁফের রেখা, কালো হাতি বাহন সহিত বিশ্বকর্মা র সাথে এর মিল নেই । এই মন্দিরের বিগ্রহ যেন ব্রহ্মার অনুরূপ , ঋগ্বেদে তাঁকে যেভাবে বিশ্বকর্মা কে কল্পনা করা হয়েছে ।
স্থানীয় শ্রমজীবি মানুষ ও অবাঙালী মানুষেরা এই মন্দির এর পরিচালনার দায়িত্বে থাকলেও সারা রিষড়া শহরের কাছে আরাধ্য এই মন্দিরের দেবশিল্পী। বয়সে নতুন হলেও পাঁচ দশক পেরিয়ে সাড়ম্বরে এই মন্দিরে পুজিত হচ্ছেন বিশ্বকর্মা । যে মন্দির সম্ভবত এই জেলায় একটি মাত্র ।