মৌমিলা দাস: বাংলার ঐতিহ্যপূর্ণ শিল্পকর্মের মধ্যে দারুশিল্প অন্যতম।নিখুঁত এবং নৈপুণ্যের সঙ্গে সৃষ্টি এই কাষ্ঠশিল্প সারা বাংলা জুড়ে বিখ্যাত।বাংলা সংস্কৃতিতে এক বিরাট ভূমিকা পালন করে এই দারুশিল্প।কাঠের ওপর খোদাই করে বিভিন্ন মূর্তি, ভাস্কর্য এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহৃত বিভিন্ন দ্রব্য তৈরি করা হয়।যাকে বলা হয় দারুশিল্প।
আদিযুগ থেকেই কাঠের ব্যাবহার হয়ে আসছে।হরপ্পা মহেঞ্জোদারোয় যে সিলমোহর পাওয়া যায় তাতে অঙ্কিত ছিল বিভিন্ন নকশা।এছাড়াও মূর্তি,আসবাবপত্র তৈরি হতো।পূর্বে আত্মরাখার জন্য কাঠ দ্বারা নির্মিত করা হতো কাঠদন্ড।সেই প্রাচীন কাল থেকে এখনো পর্যন্ত দারুশিল্পের ব্যাবহারে পরিবর্তন ঘটেনি।
বিদেশেও এক আলাদা নিদর্শন তৈরি করেছে এই দারুশিল্প।বাংলার গ্রামগঞ্জ থেকে বিদেশে অনেক দ্রব্য রপ্তানি হয়।বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানে যেমন চট্টগ্রাম, সিলেট ইত্যাদি জায়গায় পাঠানো হয় দারুশিল্পের দ্বারা গঠিত আসবাবপত্র এবং শৌখিন দ্রব্যসমূহ।
অসামান্য দক্ষতার সঙ্গে দ্রব্য তৈরি করেন দারুশিল্পীরা।বর্তমানে দারুশিল্প অনেক উন্নত হয়েছে।ব্যবহারও বেড়েছে অনেক। তবে অনেক দারুশিল্পীরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন এই শিল্পকর্ম থেকে।দেখা দিচ্ছে কাঠের অভাব।দারুশিল্পকর্মের জন্য দক্ষতা মনোভাবেরও অভাব দেখা দিচ্ছে।ঐতিহ্যগত শিল্পের প্রতি আগ্রহের নিশানাও মেলে না।
দারুশিল্পীদের নিখুঁত সৃষ্টি আকর্ষণ করে মানুষকে। মানুষ এখনও কাষ্ঠনির্মিত দ্রব্যের ওপর অনেখানি নির্ভরশীল,ব্যবহারও রয়েছে অনেক।খাট,আলমারি,আলনা ,চেয়ার ইত্যাদি আসবাবের এখনো একইরকম ব্যাবহার রয়েছে।প্রত্যেকটা ঘরে ঘরেই আসবাবপত্র থেকে শুরু করে শৌখিন দ্রব্য ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকে। ভবিষতে দারুশিল্প বাংলার সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে আরো অনেকদূর এগিয়ে নিয়ে যাবে এটাই আশা করা যায়।