Feature : সতীদাহ প্রথা রদে রাজা রামমোহন রায়ের ভূমিকা - Pralipta


কুহেলী বসু : সতীদাহ প্রথা হল হিন্দু ধর্মালম্বী বিধবা নারীদের স্বামীর চিতায় সহমরণে বা আত্মাহুতি দেবার ঐতিহাসিক প্রথা, যা রাজা রামমোহন রায়ের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বন্ধ হয়।

উত্তর-পশ্চিম রাজপুত গোষ্ঠীর মধ্যে মধ্যযুগীয যুগে সতীদাহ প্রথা প্রচলন ঘটেছিল। পরবর্তী মধ্যযুগীয় যুগে এই প্রথার ব্যাপক বিস্তার ঘটেছিল।উনিশ শতকের গোড়ার দিকে  ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ভারতের বেশিরভাগ অংশে তার শাসন প্রসারিত করায় প্রথাটিকে সহ্য করে।ব্রিটিশ খ্রিষ্টান ধর্মপ্রচারক  উইলিয়াম কেরি    কলকাতায় ৩০ মাইল  এলাকার  মধ্যে ৪৩৮টি সতীদাহ ঘটনার উল্লেখ করেছেন।  ১৮১৫ সাল থেকে ১৮১৮  সালের মধ্যে বাংলায় সতীদাহের ঘটনার সংখ্যা ৩৭৭ থেকে দ্বিগুণ হয়ে ৮৩৯-এ এসে  দাঁড়ায়। কেরির মতো ধর্ম প্রচারক এবং রামমোহন রায়ের মতো হিন্দু সংস্কারকদের দ্বারা সতীদাহ প্রথার বিরোধিতা শেষ পর্যন্ত ভারতের ব্রিটিশ গভর্নর-জেনারেল লর্ড উইলিয়ামের নেতৃত্বে হয়েছিল। 

অবশেষে ১৮২৯ সালের ৪ঠা  ডিসেম্বর ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সীতে সতীদাহ প্রথাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাতিল ঘোষণা করা হয়। এসময় বেঙ্গলের গভর্নর ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্ক। অবশ্য এই আইনি কার্যক্রম গৃহীত হয় মূলত রাজা রামমোহন রায়ের সামাজিক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতেই। এই আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে লন্ডনের প্রিভি কাউন্সিলে মামলা করা হয়। প্রিভি কাউন্সিল ১৮৩২ সালে বেঙ্গলের গভর্নর লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের ১৮২৯ সালের আদেশ বহাল রাখেন। খুব অল্পসময়ের মধ্যে ভারতের অন্যান্য কোম্পানী অঞ্চলেও সতীদাহ প্রথাকে বাতিল ঘোষণা করা হয়। রাজা রামমোহন রায় আদালতে প্রমাণ করে দেন যে সনাতন ধর্মে সতীদাহ বলে কিছু নেই।