পেগাসাসের জালে এবার কাশ্মীরিরা - Pralipta


এ.কে.এম.সোহাগ, কলকাতা, ২৪ জুলাই : আপনার অজান্তেই আপনি আপনার শত্রুকে নিজেই বহন করে চলেছেন। মজার হলেও এটাই সত্যি। শত্রুর নাম পেগাসাস। ফোন আপনার, আপনার গোপনীয়তাসহ সমস্ত তথ্য হ্যাকারদের কবলে। এমনকী, আপনি ফোন পাশে রেখে কারও সঙ্গে কথা বললেও, পাশে থাকা ফোনের ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন চালু করে হ্যাকাররা আপনাদের সমস্ত কথায় আড়ি পাততে পারে। এই মারাত্মক স্পাইওয়্যারের নাম পেগাসাস। এই পেগাসাসের  নির্মাতা দেশ হল ইজরায়েল। ইজরায়েলের বন্ধু দেশ গুলিকেই তারা এটি সরবরাহ করে। আর মোদীর ২০১৭ সালে ইজরায়েল সফর নিয়েই বিরোধীরা বারবার সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে মোদি সরকারকে।

পেগাসাসের প্রেমের জালে আগেই জড়িয়েছে বিরোধী নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নির্বাচন কমিশনারের মত ব্যক্তিত্বরা। তবে সম্প্রতি এবার পেগাসাসের ছলনাময়ী প্রেমের জালে কাশ্মীর সাংবাদিক ও সমাজকর্মীরা ছাড়াও ২৫ জন বাসিন্দা। তদন্তকারী সংবাদ মাধ্যমগুলির তথ্যে তেমনটাই উঠে আসছে। তদন্তকারী সংবাদ মাধ্যম "দ্য ওয়্যার" জানিয়েছে কাশ্মীরের বিচ্ছিন্নবাদী নেতা বিলাল লোন ও দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গিলানির ফোনেও পেগাসাসের হানার চিহ্ন মিলেছে। "পিপলস ইন্ডিপেন্ডেন্স মুভমেন্ট" নামে একটি সংগঠনের নেতা ছিলেন বিলাল। "দ্য ওয়্যার" - এর দাবী, যখন বিলালের ফোনে নজরদারি চালানো হয়েছিল তখন তিনি রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন না। এ বিষয়ে বিলালের বক্তব্য, ‘‘আমি আপাতত রাজনীতি থেকে সরে এসে বেকারির ব্যবসায়ে মন দিয়েছি। ফোনে নজরদারির কথা শুনতাম। তবে আমাকে নিশানা করা হতে পারে তা ভাবিনি। এ বিষয়ে পদক্ষেপ করার ক্ষমতা আমার নেই।’’

সূত্র মারফত ও তদন্তে পরিষ্কার হচ্ছে নতুন তথ্য বহুজাতিক সংস্থা 'মেহিকো মনসান্টো বায়োটেক' ও 'মনসান্টো ইন্ডিয়া' সংস্থার একাধিক কর্তার মোবাইলে আড়িপাতার জন্য টার্গেট করা হয়েছিল। তদন্ত অনুযায়ী, সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত অসমের আসু-র নেতা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য, নাগাল্যান্ডের বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনের চারজন নেতার মোবাইলও নিশানায় ছিল এই পেগাসাসের। রবিবার থেকে এক এক করে তথ্য সামনে আসতেই বিরোধিরা বিরোধীতায় বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের থেকে কোনো উত্তর আসেনি। তাহলে কি মোদি সরকার ইসরাইলের থেকে কিনেছিল? তিনি কি এই পেগাসাস কাজে লাগিয়েছেন? বিরোধীদের বক্তব্য, 'এর ফলে সরকারই আড়ি পেতেছে বলে প্রমাণ হচ্ছে।' এহেন পরিস্থিতিতে অশোক গললৌত, কপিল সিব্বলের দাবি, 'এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করুক।'