ধরমপুরের ৩৫০ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহিষমর্দিনী পুজো - Pralipta

অঙ্কুর মজুমদার : আজ থেকে প্রায় ৩৫০ বছর আগে স্থানীয় অধিবাসীগণ শক্তি পুজোর আগ্রহে মহিষমর্দিনী পুজোর প্রবর্তন হয়। ধরমপুরের প্রাচীন ধর্মরাজ ঠাকুর মন্দিরের কাছেই প্রতিবছর স্থায়ী মণ্ডপে মহিষমর্দিনী পুজো হয়ে আসছে। বর্তমানে যে নবনির্মিত মন্দিরটি দেখা যায় তা জনসাধারণের অর্থানুকূল্যে নির্মিত হয়েছে। ১৯৭৭ সালে ১৪-ই জুন বিশিষ্ট ব্যক্তি ডাঃ মুরারী মোহন মুখোপাধ্যায় এবং তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী অধ্যাপক শম্ভুচরণ ঘোষ-এর উপস্থিতিতে নব নির্মিত মন্দিরের আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস হয় এবং তারপর ২০১৮ সালে মন্দির সংলগ্ন জায়গায় নাট মন্দির স্থাপন হয়। তাছাড়াও এই মহিষমর্দিনী পুজোর একাধিক নিয়ম, প্রতিমার রূপের তারতম্য, আরও অনেক অজানা তথ‍্য মানুষের কাছে বছরের পর বছর অজানাই রয়ে গেছে। প্রলিপ্ত নিউজ পোর্টালের পক্ষ থেকে এই অজানাকে জানানোর ন্যূনতম প্রচেষ্টা।

বেশ কয়েক বছর আগের মহিষমর্দিনী মূর্তির ছবি, মুখার্জি বাড়ি থেকে প্রাপ্ত

পুরাতন মন্দির এর বিবরণ :

ধরমপুর মহিষমর্দিনী তলার বর্তমান মন্দিরের সাথে প্রাচীন মন্দিরের কোনো অনুরূপ পাওয়া যায় না। প্রাচীন মন্দির ছিল বেশ ছোট। অনুমান করা যায় ১২-১৩ ফুট লম্বা। ছোট একটি ইটের বাড়ির স্থাপত্য ছিল এবং তার তিনদিক থেকে টিনের চাল নামানো ছিল, টিনের চালগুলো কাঠের নকশা করা মোটা মোটা থামের সঙ্গে সংযুক্ত করা ছিল। মন্দির দালানে এই থাম ছাড়া অন্য কোনও থাম লক্ষ্য করা যেত না। মূল মন্দিরে কাঠের ফলক ছিল। ভিতরে মহিষমর্দিনীর পূজিত বেদী ছিল। দালানটা যেহেতু উঁচু ছিল ফলত সিঁড়ির সঙ্গে মন্দির ও রাস্তার সংযোগ ছিল। স্থানীয় লোকমুখে জানা যায় মন্দিরের সংলগ্ন একটি লাইব্রেরী ছিল, যা পরবর্তীতে নতুন মন্দির নির্মাণকালে ভেঙে ফেলা হয়। সেখানেও জাঁকজমক করে পুজো হত। প্রত্যহ সন্ধ্যায় মন্দিরে সন্ধ্যাপ্রদীপ জ্বলতো। কিন্তু পুরনো মন্দির কে বা কবে নির্মাণ করেছিল তার ইতিহাস জানা সম্ভব হয়নি।

শ্রী নন্দদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৌখিক বর্ননা অনুযায়ী পুরাতন মহিষমর্দিনী মন্দিরের অঙ্কিত চিত্র (১৯৭৭ সালের পূর্বে), [ছবি : কল্পক রায়]

প্রতিমার কালক্রমে পরিবর্তন ও অন্যান্য বর্ণনা :

স্থানীয় লোকমুখে জানা যায় বর্তমানে যে প্রতিমা আমরা দেখি তা আজ থেকে ৫০ বছর আগে এরকম ছিল না। মায়ের আগের রূপ ছিল সাবেকিয়ানা, খাস বাংলার মুখের আদলে। সেই সময়ে মায়ের প্রতিমা নির্মাণ করা হত টানা টানা চোখ, গাত্রবর্ণ হলুদ এবং মৃন্ময়ী রূপ বজায় রেখে। ফলে বর্তমানে সময়ের সাথে মায়ের মুখের পরিবর্তন হয়েছে, টানা চোখ আর লক্ষ্য করা যায় না, মায়ের মুখে আধুনিকতার ছাপ স্পষ্ট, দশভূজা এবং সিংহবাহিনী, মায়ের দু'হাত সামনে প্রসারিত থাকে তাতে মা ধারণ করেন অশি এবং ঢাল, ডানদিকে সবচেয়ে নীচের হাতে মা ধারণ করেন ত্রিশূল, যা দিয়ে মা মহিষাসুরকে পরাস্ত করেছেন, এবং অন্যান্য হাতে গদা, তীর, ধনুক, বজ্র, চক্র, কুঠার এবং শঙ্খ লক্ষণীয়।

তাছাড়াও মহিষাসুরকে দেখা যায় তিনি মহিষের গ্রীবা দেশ থেকে বের হচ্ছেন, মহিষাসুরের এই মূর্তি এখানে অন্যতম বড় আকর্ষণ যা অপরিবর্তিত রয়েছে যুগ যুগ ধরে। মা মহিষমর্দিনীর বাহন পশুরাজ সিংহের গায়ের রং বরাবর সাদা, যা কোনোদিন পরিবর্তন হয়নি স্থানীয় লোকমুখে জানা যায়। মা মহিষমর্দিনীর মূর্তিতে আর এক বিশেষ বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়, এখানে মায়ের ডানদিকে অবস্থান করে দেবাদিদেব মহাদেব ও বামদিকে অবস্থান করে সিদ্ধিদাতা গণেশ। লক্ষ্মী-সরস্বতী বা কার্তিক ঠাকুরকে এখানে দেখা যায় না। তবে কেন শুধুই মহাদেব ও গনেশকেই দেখা যায় তার তথ্য সঠিকভাবে জানা যায়নি। স্থানীয় মানুষদের মুখে শোনা যায় জামাইষষ্ঠীর দিনে মেয়ে যেমন স্বামী ও ছোটো ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে আসেন, সেই নিয়মরীতি মেনেই হয়তো সমগ্র মহিষমর্দিনী মূর্তির এই বৈশিষ্ট্য।

তবে আজ থেকে ২০০ - ৩০০ বছর আগে মায়ের মূর্তি এত বড় হত না, তুলনামূলক অনেক ছোট হত। আগেও মাকে স্বর্ণ অলংকারে সাজানো হত, বর্তমানেও হয়। তবে আধুনিকতার ছাপ এই বিষয়ে লক্ষ্য করা যায়। স্থানীয়দের মুখে জানা যায় যে বর্তমানেও পঞ্চমীর দিন মা কে অনেক সোনা ও রুপোর অলংকারে সাজানো হয়। আগেও মা-এর কাঠামো ছিল বলে জানা যায় তবে বর্তমানে স্থায়ী একটি কাঠামো স্থাপন করা হয়েছে যার উপরে মায়ের মূর্তি গড়ে তোলা হয় এবং বিসর্জনের পর মূল মন্দিরে সারাবছর কাঠামোটি রেখে দেওয়া হয়।

কালক্রমে মূর্তির পরিবর্তন (ডানদিকে পুরাতন বাঁ দিকে নতুন)

ময়রা পুকুর :

মহিষমর্দিনী মূল মন্দিরের বামদিকে বা বলা যেতে পারে বিপরীতেই একটি পুকুর রয়েছে যা স্থানীয় অঞ্চলে 'ময়রা পুকুর' নামেই পরিচিত। আগে স্নানযাত্রার দিন স্থানীয় এই ময়রা পুকুরে মা-কে বিসর্জন দেওয়া হত। তবে ১৯৭০ সাল থেকে প্রতিমা বিসর্জন হয় গঙ্গায়। তবে পুজোর ঘট বিসর্জন আজও এই ময়রা পুকুরেই হয়। এই ময়রা পুকুরকে কেন্দ্র করে কিছু কিংবদন্তী প্রচলিত আছে যার মধ্যে থেকে দুটি জানানো হচ্ছে —

প্রথমত স্থানীয় লোকমুখে জানা যায় আগে এই ময়রা পুকুরটি সারাবছর শুকনো থাকতো এমনকি স্থানীয় মানুষ হাঁটাচলাও করতো। তবে ঠিক প্রতিমা নিরঞ্জনের সময় নাকি আচমকা এই পুকুরের জল ভরে যেত। অর্থাৎ যে পুকুর সারাবছর মানুষের কাছে মরা পুকুর হিসাবে দৃষ্টান্ত হত তা পুজোর বিসর্জনের সময় নাকি জলে ফুলে-ফেঁপে উঠত। এই কাল্পনিক ঘটনা বেশ বিস্ময়।

দ্বিতীয়ত প্রায় ১০০ বছর আগে এই মন্দিরের মৃৎশিল্পী ভীম পালের সঙ্গে একটি অলৌকিক ঘটনা ঘটে যা লোকালয়ে বেশ চর্চিত। ঘটনাটি হল ঠিক এই ময়রা পুকুরের এক প্রান্তে একটি শাঁখারী তার নিজের সামগ্রী নিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন বিক্রি করার উদ্দেশ্যে। হঠাৎ একটি বাচ্চা মেয়ে তার কাছে ছুটে আসে জানা যায় মেয়েটির সিঁথিতে লাল টকটকে সিঁদুর পরিপূর্ণ ছিল, তার পরনে লাল সাদা শাড়ি ছিল কিন্তু তার হাত জোড়া ছিল খালি। মেয়েটি শাঁখারীর কাছে শাখা পড়তে চান শাঁখারী পরিয়ে দেন এরপর শাঁখারী টাকা চাইতেই ভীম পালের বাড়িটি নির্দেশ করে বাচ্চা মেয়েটি জানায় যে সেখান থেকেই টাকা চেয়ে নিতে। শাঁখারী ভীম পালের বাড়িতে এসে উপস্থিত হয় এবং তাকে বলে আপনার মেয়ে শাঁখা পড়েছে আমাকে টাকা দিন। ভীম পাল অবাক হয়ে তাকে জানান তার কোনো কন্যা সন্তান নেই, তারা ছুটে যায় ময়রা পুকুরের দিকে এবং দেখে সেই মেয়েটি হাত ভর্তি শাঁখা পলা দেখিয়ে পুকুরে ঝাঁপ দেয় এবং তারপর অদৃশ্য হয়ে যায়। এই লোকগাঁথা মা মহিষমর্দিনীর একটি লীলা রূপেই স্থানীয় অঞ্চলে প্রচলিত আছে। 

মন্দির সংলগ্ন ময়রা পুকুরের ছবি

ময়রা পুকুরের আলোকসজ্জা পূজোর সময়ের

মানত প্রথা ও বলি প্রথা :

আজ থেকে প্রায় ১১০-১২০ বছর আগে মহিষমর্দিনী পুজোর নবমীর দিন পশু বলির প্রথা ছিল, মোষ এবং পাঁঠা বলির চল ছিল। লোকমুখে শোনা যায় যে পুজোর একমাস আগে থেকেই নাকি একটি মোষকে নির্দিষ্ট করা হতো এবং তার গলায় ঘি মাখিয়ে ঢাক-ঢোল পিটিয়ে পাড়ায় ঘোরানো হত।

ধরমপুর নিবাসী শ্রী নরেন চ্যাটার্জ্জী অর্থাৎ যার নামে বর্তমানে নামাঙ্কিত নরেন চ্যাটার্জী লেন তিনি মহিষমর্দিনী দেবীর থেকে স্বপ্নাদেশ পেয়েছিলেন এই বলি প্রথা বন্ধ করার এবং তারপর থেকেই বলি প্রথা তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে এই মন্দিরে বলি বা পশু হত্যার কোনো রীতি নেই, বেশ কয়েক বছর আগে চাল কুমড়ো, আখ প্রভৃতি বলি দেওয়ার রীতি ছিল। তবে বর্তমানে কোনও বলি প্রথার রীতি নেই। 

ধরমপুর মহিষমর্দিনী তলায় মা মহিষমর্দিনীর জন্য দূরদূরান্ত থেকে মানুষ এসে ভিড় জমায় এই অঞ্চলে। আঞ্চলিক লোকেদের কাছ থেকে অষ্টমীর দিনের যে মানত প্রথাগুলো সম্পর্কে জানা যায়, তা হল - 

দণ্ডী কাটা : মন্দির সংলগ্ন ময়রা পুকুর থেকে দণ্ডী কেটে মায়ের মূল মন্দির পর্যন্ত যেতে একাধিক মানুষের ভিড় দেখা যায়। ভক্তরা পুকুরে স্নান করে নতুন গামছা, ধুতি, শাড়ি প্রভৃতি পরিধান করে দণ্ডী কাটা শুরু করেন। আবার শোনা যায় অনেকে নাকি গঙ্গা থেকে দণ্ডী কেটে এই মন্দির পর্যন্ত আসেন।

মালসা পোড়ানো : 'দণ্ডী কাটা' শেষ হলে অনেককে দেখা যায় মায়ের সামনে বসে ছোট ছোট মালসা পুড়িয়ে থাকেন। আবার কেউ কেউ মাথায় সেই মালসা নিয়ে মা মহিষমর্দিনীর আরাধনা করে থাকেন। এই প্রথাটি সম্পূর্ণ মন্দিরের ভিতরে হয়ে থাকে। 

বাতাসা লুঠ : আবার শোনা যায় অনেকেই নাকি মন্দিরের সামনের সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে 'বাতাসা লুঠ' করে থাকেন।

দান প্রথা : অনেক ভক্তরা মানত পূরণ হলে দান হিসেবে বস্ত্র, গহনা ও বাসনপত্র দিয়ে থাকেন মায়ের উদ্দেশ্যে। 

বাতাসা লুঠের ছবি

মুখার্জির বাড়ির নারায়ণ শিলা :

মহিষমর্দিনী পুজোতে মহিষমর্দিনীর সঙ্গে নারায়ণ শিলারও পুজোর রীতি আছে। এই নারায়ন শিলাকে কেন্দ্র করে একটি ইতিহাস লুকিয়ে রয়েছে। যখন এই পুজো শুরু হয় তখন এই অঞ্চলে জনবসতি প্রায় নেই বললেই চলে এবং চারিদিকে জঙ্গলময়। মন্দিরের উত্তর দিকে ব্রাহ্মণ পরিবার বলতে মুখার্জিদের-ই বাড়ি ছিল। ফলে এই বাড়ির প্রতিষ্ঠিত নারায়ন শিলা নিয়ে মন্দিরের পুজো শুরু হয়। এবং আশ্চর্যভাবে ধরমপুরের মুখার্জি গলিতে সেই মুখার্জি বাড়ির নারায়ণ শিলা আজও পুজোর সময় কাঁসর, ঘন্টা, শঙ্খ, ঢাক এবং মন্ত্র উচ্চারণ সহযোগে সপ্তমীর দিন মন্দিরে নিয়ে আসা হয়, পুজোর শেষে দশহারাতে নারায়ণ শিলা ফিরে যায় আবার মুখার্জি বাড়িতে।

নারায়ণ শিলা (মুখার্জি বাড়ির থেকে প্রাপ্ত)

পুজোর কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য, অনুষ্ঠান ও ভোগ :

প্রতিবছর জৈষ্ঠ্য মাসে অরণ্যষষ্ঠী (জামাই ষষ্ঠী) তিথিতে দেবীর মৃন্ময়ী প্রতিমা নির্মাণ করে সপ্তমী থেকে দশমী (দশহরা) পর্যন্ত পুজো অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে পুজোর কয়েকদিন মেলা বসে। তবে আগে মন্দিরের সামনের প্রাঙ্গণে গান, যাত্রাপালা, পুতুল নাচ পুজোর দিনগুলিতে চলতো। শোনা যায় আগে স্নানযাত্রা পর্যন্ত মণ্ডপে দেবী মূর্তি রাখা হত। এবং আরেকটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল এই পুজোয় সন্ধিপুজো হয় না, এমনকি বিসর্জনের আগে কোনওরূপ মহিলাদের দ্বারা বরণও হয় না।

পুজোয় অন্নভোগ দেওয়ার রীতি নেই। আমিষ ভোগ সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ। তার পরিবর্তে রাত্রে দেওয়া হয় লুচি ও মালপোয়া ভোগ। 

পুজোর মেলার ছবি

পুজোয় ভোগ

নতুন মন্দিরের কথা :

প্রাচীন মন্দির ভেঙে নতুন মন্দির তৈরি হয় ১৯৭৭ সালে এবং তা সম্পূর্ণ হয় ১৯৮৯ সালে। ১৯৭৭ সালের ১৪-ই জুন মন্দির ভিত্তি প্রস্তরের কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে, তবে এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন ধরমপুর নিবাসী শ্রীমতি মনোরমা ঘোষের হাত ধরেই নতুন মন্দিরের নির্মাণ শুরু হয়। নতুন মন্দিরটি তৈরি হয়েছে দুইজন নির্মাণ শিল্পীর দ্বারা। শোনা যায় স্থানীয় এক নির্মাণ শিল্পীকে নিযুক্ত করা হয় যার নাম ছিল বিমলেন্দু ভট্টাচার্য, তিনি মন্দিরের ভিত থেকে শুরু করে মাথার অংশ পর্যন্ত নির্মাণ করেন তবে চূড়াটি কিছুতেই শেষ করতে পারছিলেন না, ফলে তার প্রাপ্য মিটিয়ে এই অসম্পূর্ণ কাজ সম্পন্ন করতে আদ্যাপীঠ সহ বেলুড় মঠের নির্মাণ কর্তার সুযোগ‍্য পুত্র বিশিষ্ট শিল্পী চিলানী সাউ-কে নিযুক্ত করা হয় এবং তিনি মন্দিরের চূড়ার নির্মাণকার্যটি সম্পন্ন করেন। ২০১৫ সালে মন্দিরের সামনে ফাঁকা প্রাঙ্গণে নাট মন্দিরের কাজ শুরু হয় এবং ২০১৮ সালে তা সম্পূর্ণ হয়। 

বর্তমান মন্দির

মহিষমর্দিনী মন্দির সংলগ্ন কয়েকটি মন্দিরের কথা :

এই সুসজ্জিত মন্দিরের অপরদিকে যেখানে মেলা হয় তার ডানদিকেই দুর্গা মন্দির, রাধাকৃষ্ণ মন্দির, মা করুণাময়ী, বাবা মঙ্গলেশ্বর এবং সিদ্ধিদাতা গনেশের রয়েছে, এই মন্দিরগুলো গত কয়েকবছরের মধ‍্যেই স্থাপন করা হয়েছে। 

মহিষমর্দিনী মন্দির সংলগ্ন কয়েকটি মন্দির

মন্দিরের পুরোহিত ও মৃৎশিল্পী নিয়ে কিছু কথা :

আঞ্চলিকভাবে শোনা যায় চ্যাটার্জি পরিবারের উপর এই মন্দিরের পুজোর দায়িত্ব ছিল এবং এই পরিবার থেকে যে পুরোহিতের সর্বশেষ নাম পাওয়া যায় তিনি হলেন লক্ষ্মীনারায়ণ চ্যাটার্জী এই লক্ষ্মীনারায়ণ চ্যাটার্জীর খোঁজ করতে গিয়ে জানা যায় এর পূর্বে নরেন্দ্রনাথ চ্যাটার্জী এবং ভোলানাথ চ্যাটার্জী এই পুজো করতেন তবে বর্তমানে লক্ষ্মীনারায়ণ বাবুর পরিবর্তে অধিকারী পরিবারের অসীম অধিকারীকে এই পুজোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। 

মন্দিরে কাঠামোর ওপর মূর্তি তৈরির প্রথা অতীত থেকেই চলে আসছে। যে পাল পরিবারের ওপর দায়িত্ব রয়েছে এই মূর্তি নির্মাণের তাদের মধ্যে যার নাম সর্বপ্রথম পাওয়া যায় তিনি হলেন ভীম পাল। তাঁর অবর্তমানে মূর্তি তৈরি করতেন তার ছেলে নন্টে পাল এবং বর্তমানে এখন মূর্তি তৈরি করেন তপন পাল।

মন্দিরে কাঠামোর ওপর মূর্তি তৈরির মুহুর্ত

... 
তথ্যসূত্র - 

• হুগলী জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ - সুধীর কুমার মিত্র
• হুগলী জেলার লৌকিক দেবতা - কৌশিক পাল চৌধুরী
• সাহিত্য সেতুর কিছু সংখ্যা
• হুগলী কলেজ ম্যাগাজিন
• পরিস্থিতি পত্রিকার কিছু সংখ্যা
• আনন্দবাজার পত্রিকা
• ধরমপুর মহিষমর্দিনী অঞ্চলের কয়েকজন প্রাজ্ঞ ব‍্যাক্তিত্ব
... 
বিশেষ সহযোগিতায় - 
প্রলিপ্ত টিম মেম্বার ও কল্পক রায়