চুঁচুড়া শহরের নেপালেশ্বর মন্দির - Pralipta

মন্দিরের কিছু ছবি

কল্পক রায় : ঐতিহাসিক শহর চুঁচুড়া। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নানা ইতিহাস শহরের আনাচে কানাচে। তেমনি চুঁচুড়া স্টেশন থেকে দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গঙ্গা তীরবর্তী ষঁন্ডেশ্বর জীউ, সকলেই ষঁন্ডেশ্বরতলা বলেই চেনে। এই ষঁন্ডেশ্বর মহাদেবের মন্দির প্রায় পাঁচশো বছর পুরাতন।

ষঁন্ডেশ্বর মন্দির দর্শন করে গঙ্গার ঘাটের দিকে যাওয়ার সময় বাম দিকে অর্থাৎ মন্দিরের ঠিক পিছন দিকে অবস্থিত নেপালেশ্বর মন্দির। বর্তমানে মন্দিরটি জরা-জীর্ণ, তবে কে কত সালে মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। কথিত আছে যে যখন ষঁন্ডেশ্বর বাবার পুজো অব্রাহ্মণদের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় তখন বাবার পুজো হতে বঞ্চিত এই অব্রাহ্মণগণ একজোট হয়ে বা এও শোনা যায় কোন একক ব্যক্তির উদ্যোগে স্থাপন করা হয় নেপালেশ্বর মন্দির। অব্রাহ্মণেরা এখানে শিব ঠাকুরের মাথায় জল ঢেলে পূজার্চনা শুরু করেছিলেন।

মন্দিরের সম্মুখের ছবি 

বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক শ্রী কার্তিক চরণ পাল মহাশয় ১৩৬৭ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৯৬০ খ্রিস্টাব্দে নেপালেশ্বর বাবার মন্দিরটি সংস্করণ করেন এবং মন্দিরের ভিতরের দেওয়ালে ধ্যানমগ্ন শ্বেতপাথরের মহাদেবের একটি খোদিত ফলক উপস্থাপন করেন। শ্রী কার্তিক চরণ পাল মহাশয় তাঁর মাতা শ্রীমতি উমাশশী পালের স্মৃতি কল্পে মন্দিরটি সংস্করণ করেছিলেন।

মন্দিরের ফলক

নেপালেশ্বর মন্দিরটি একচূড়া বিশিষ্ট। মন্দিরটি চূড়া নিয়ে খুব বড়জোর ১৫ থেকে ১৮ ফুট এবং চওড়ায় ৮ থেকে ৯ ফুট লম্বা হবে। বাইরের দেওয়াল রং চটা এবং কিছু কিছু জায়গায় ফাটল দৃশ্যমান। দরজার ফ্রেমটি কাঠের তৈরি এবং মন্দিরে প্রবেশ করতে গেলে দুই ধাপের সিঁড়ি অতিক্রম করতে হবে। গর্ভ গৃহে বেশি জায়গা নেই বললেই চলে। মন্দিরের ভিতরে মহাদেবের শ্বেতপাথরের খোদিত ফলকটি ছাড়া রয়েছে অজস্র ছোট ছোট শিবলিঙ্গ এবং কিছু ছোট বড় শিলাখণ্ড যা মহাদেবের স্বরূপ মেনে পুজো করা হয়।

মন্দিরের অভ‍্যন্তরের ছবি

মন্দিরের চূড়াতে রয়েছে প্রাচীন নকশা এবং শ্রী কার্তিক চরণ পালের সংস্করণ কালের একটি ফলক।

মন্দিরের ছবি

এছাড়াও মন্দিরের বাইরে থেকে ডান পাশে রয়েছে একটি বেশ মোটা আকৃতির অপেক্ষাকৃত ছোট থাম যাতে ধুপকাঠি, মোমবাতি পুজোর পর পোতা হয়। আর মন্দিরের তেমন কোনো বিশেষ বিবরণ নেই বললেই চলে।

তথ‍্যসুত্র:

▪ শ্রীশ্রী বাবা ষঁন্ডেশ্বর জীউ ও সন্নিহিত দেব-দেবী সমূহ - শ্রী সুভাষচন্দ্র ঘোষ
▪ খন্ডচিত্রে কনকশালী - শ্রী সুভাষচন্দ্র ঘোষ
▪ হুগলি জেলার ইতিহাস ও বঙ্গসমাজ - শ্রী সুধীর কুমার মিত্র 
▪ হুগলি জেলার দেব-দেউল - শ্রী সুধীর কুমার মিত্র
▪ ষঁন্ডেশ্বর স্মরণিকা

সহযোগিতায় অঙ্কুর মজুমদার