পেগাসাসের ছলনাময়ী প্রেমের জালে শিল্প - কর্তারাও - Pralipta


এ.কে.এম.সোহাগ, কলকাতা, ২২ জুলাই : আপনার অজান্তেই আপনি আপনার শত্রুকে নিজেই বহন করে চলেছেন। মজার হলেও এটাই সত্যি। শত্রুর নাম পেগাসাস। ফোন আপনার, আপনার গোপনীয়তাসহ সমস্ত তথ্য হ্যাকারদের কবলে। অকল্পনীয় হলেও সত্য। এই স্পাইওয়্যার এতটাই মারাত্মক যে এক ক্লিকেই তা মোবাইলে ঢুকে যেতে পারে। তারপরই সেই ফোন চলে যায় পুরোপুরি হ্যাকারদের কব্জায়। এমনকী আপনি ফোন পাশে রেখে কারোও সঙ্গে কথা বললেও, পাশে থাকা ফোনের ক্যামেরা বা মাইক্রোফোন চালু করে হ্যাকাররা আপনাদের সমস্ত কথায় আড়ি পাততে পারে। এই মারাত্মক স্পাইওয়্যারের নাম পেগাসাস। এই পেগাসাসের  নির্মাতা দেশ হল ইজরায়েল। ইজরায়েলের বন্ধু দেশগুলিকেই তারা এটি সরবরাহ করে। আর মোদীর ২০১৭ সালে ইজরায়েল সফর নিয়েই বিরোধীরা বারবার সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে মোদি সরকারকে। সংসদের বাদল অধিবেশনের দ্বিতীয় দিনেও বিরোধীদের সোচ্চার হওয়া সেই পেগাসাস। পেগাসাসের প্রেমের জালে আগেই জড়িয়েছে বিরোধী নেতা, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নির্বাচন কমিশনারের মত ব্যক্তিত্বরা। তবে সম্প্রতি এবার পেগাসাসের ছলনাময়ী প্রেমের জালে শিল্পমহলও। সূত্র মারফত ও তদন্তে পরিষ্কার হচ্ছে নতুন তথ্য বহুজাতিক সংস্থা 'মেহিকো মনসান্টো বায়োটেক' ও 'মনসান্টো ইন্ডিয়া' সংস্থার একাধিক কর্তার মোবাইলে আড়িপাতার জন্য টার্গেট করা হয়েছিল। তদন্ত অনুযায়ী, সিএএ বিরোধী আন্দোলনে যুক্ত অসমের আসু - র নেতা সমুজ্জ্বল ভট্টাচার্য, নাগাল্যান্ডের বিচ্ছিন্নবাদী সংগঠনের চারজন নেতার মোবাইলও নিশানায় ছিল এই পেগাসাসের। যে ইজরায়েলি সংস্থা এই পেগাসাস বিভিন্ন দেশকে বিক্রি করেছিল, তাদের তথ্যভাণ্ডার থেকেই প্রায় ৫০ হাজার ফোন নম্বরের তালিকা সম্প্রতি ফাঁস হয়েছে। সেখানে ভারতের ৩০০ এর বেশি নম্বর আছে সেই তালিকায়। রবিবার থেকে এক এক করে তথ্য সামনে আসতেই বিরোধিরা বিরোধীতায় বারবার প্রশ্নবিদ্ধ করেছে প্রধানমন্ত্রীকে। কিন্তু এখন পর্যন্ত সরকারের থেকে কোনো উত্তর আসেনি। তাহলে কি মোদি সরকার ইসরাইলের থেকে কিনেছিল? তিনি কি এই পেগাসাস কাজে লাগিয়েছেন? বিরোধীদের বক্তব্য, 'এর ফলে সরকারই আড়ি পেতেছে বলে প্রমাণ হচ্ছে।' এহেন পরিস্থিতিতে অশোক গললৌত, কপিল সিব্বলের দাবি, 'এ বিষয়ে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করুক।' আজ এডিটস গিল্ডের করা বক্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি জানিয়েছেন, 'এটা বাকস্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের ওপর হামলা। এই নজরদারির মূল বার্তা হল, সাংবাদিকতা, রাজনৈতিক বিরোধীতাকে এখন সন্ত্রাসবাদের সমান করে দেখা হচ্ছে।'