তিলোত্তমার খাবারের অলিগলি - Pralipta

সূর্যা দাস, কলকাতা, ২৬ জুলাই : 

ডেকার্স লেন : ধর্মতলার ট্রামডিপোর ভেতর দিয়ে গিয়েই ডান হাতে, সামনে তাকালেই রাজভবন। আর রাস্তা পার হয়েই জিমস হিকী সরণী, সবার প্রিয় ডেকার্স লেন। কথায় আছে 'সস্তায় পুষ্টিকর', কথাটা যেন এখনকার সাথেই সবচেয়ে বেশি প্রযোজ্য। পুরনো এই সরু গলিতে মিলবে হরেকরকম খাবার বাঙালি, চাইনিজ, তন্দুরী, রোল, কাটলেট, কবিরাজি, মিষ্টি। 

ইতিহাস হাতরালে জানা যায়, এখনকার এই খাবারের গলি একসময়ে ছিল জেমস হিকী ছাপাখানা। উনবিংশ শতকে ভারতের প্রথম ছাপাখানা। আর এখান থেকে সূত্রপাত হিকীস বেঙ্গল গেজেটের, যেখানে থাকত ব্রিটিশ সেনা আর নৌবাহিনীর খবরাখবর। ২০০ বছরের পুরনো এই জায়গায় আসতেন ফিলিপ মিলনের ডেকার তাঁর বন্ধু বান্ধবদের সাথে সাক্ষাৎ করতে, আর সেখান থেকেই এই ডেকার্স লেনের নাম হয়। ডেকারই বহু বিজ্ঞাপন পাইয়ে দেন হিকীস গেজেটকে। 

কিন্তু বর্তমানে এসব নেই কিছুই, শুধু রয়ে গেছে হিকী আর ডেকার নামটাই।কলকাতা শহরে অফিস টাইমের পেট ভরানোর জায়গা এখন এটা। হরেক রকমের খাবারের মধ্যেও এখানকার কিছু বিশেষ খাবার আছে যা ভোজন রসিকদের মন ভরিয়ে দেবে।

চিত্তবাবুর দোকান : পুরনো এই দোকানেই শুরু হয় কন্টিনেন্টাল  কুইজিন। প্লেটে সেঁকা পাউরুটি, আর পাতলা চিকেন ষ্টু। যা এখন সবার মধ্যে জনপ্রিয়। এ দোকান চালান তৃতীয় প্রজন্ম। এখানকার আরও বিশেষ কিছু খাবার হল ডিমের ডেভিল, কবিরাজি, ঘুগনি পাউরুটি।

আপনজন : পুরনো দোকানগুলোর মধ্যে আপনজন অন্যতম। এখানে খিচুড়ি, মন ভরিয়ে দেবে। বেগুন ভাজা, পাঁপড়, চাটনি, ঘি দিয়ে পরিবেশন করা হয়। এছাড়াও চাউমিন, ফ্রাইড রাইস, অন্যান্য খাবার মিলবে এখানে।

ক্লাসিক ফাস্ট ফুড সেন্টার : নর্থ ইন্ডিয়ান খাবারের পাশাপাশি চাইনিজ, সুস্বাদু বিরিয়ানি-কোর্মা মিলবে এখানে। সাথে পাওয়া যাবে বাঙালি স্টাইলে তৈরি চাউমিন।
লস্যি, প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তি মিলবে এখানে এলে। মুহূর্তেই বানিয়ে দেবে নানা স্বাদের লস্যি। 

কলকাতার এইসব গলিতে পাওয়া যাবে বাঙালির মনপসন্দ সব খাবার। এইসব গলিতে মিশে আছে অনেক ইতিহাস, পথচলতি অনেক গল্প। দিনের শেষে ক্লান্ত মুখ, আবার তৃপ্তির সুখ। তাহলে আর কি, ভোজন রসিক মানুষ হলে একবার ঘুরেই যান এ গলিতে।