ভারতের জাতীয় পতাকা - এক ইতিহাসের স্বাক্ষী - Pralipta


প্রত্যেক জাতির আত্ম চেতনার উন্মেষ এর সঙ্গে সঙ্গে স্বীয় আদর্শ ,উদ্দেশ্য, কর্মপন্থা ও আশা-আকাঙ্ক্ষাকে এক একটি প্রতীক এর মধ্য দিয়ে আত্মপ্রকাশ করতে প্রয়াসী হয়েছে ।আর ইহার ফলে হয়েছে বিভিন্ন জাতীয় চরিত্র এর সঙ্গে বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বিভিন্ন জাতির পতাকা ।জাতীয়তাবোধ এর ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে বিভিন্ন দেশ তাদের রুচি ও মর্যাদা আদর্শ অনুযায়ী কোনো না কোনো প্রতীক ধারণ করত। সেই কারণে সব দেশের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে জাতীয় পতাকার ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। স্বাধীনতার ক্রমাগত ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে আমরাও আমাদের স্বাধীনতার পতাকাকে পেয়েছি। তাই জাতীয় পতাকা আমাদের নমস্য ও পূজনীয়। এই জাতীয় পতাকা সমস্ত জাতির অবিচ্ছিন্ন অঙ্গের প্রতিভূ। ভারত বর্ষ বিরাট দেশ প্রথম থেকে সার্বভৌম ধারণা গড়ে ওঠেনি। প্রাচীনকালে ভারত বর্ষ নামটাই হয়ে ওঠেনি। এই প্রকাণ্ড দেশ স্মরণাতীত কাল থেকেই ছোট ছোট রাজ্যে বিভক্ত ছিল মাঝে মাঝে কোনো কোনো শক্তিশালী সম্রাট চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য থেকে সমুদ্রগুপ্ত পরবর্তীকালে মুঘল সম্রাট গণ এক নিয়মের মাধ্যমে সমগ্র ভূখণ্ড এক মানচিত্রের মধ্যে আনার চেষ্টা করেছেন কিন্তু এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় আর তার ফলে জাতীয়তাবোধ খন্ড চিত্রের মধ্যে আবদ্ধ হয়ে ওঠে। তাই ইংরেজ আমলে ইংরেজ শাসন ব্যবস্থার প্রভাবে একই শাসন ব্যবস্থার ফলশ্রুতি হিসেবে ভারতীয় সভ্যতার কৃষ্টি ও সভ্যতার নির্জিত প্রবাহ জাতীয়তাবাদের ধারা দেশবাসিতো অন্তরে ফল্গু ধারার মতো প্রবাহিত হতে থাকে। পরাধীনতার গ্লানি পুঞ্জিভূত থাকলেও ভারতবর্ষের মধ্যে অপমান বোধটা তখন তীব্র হতে পারিনি। 1905 সালে লর্ড কার্জনের বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের পর এই ভারতবর্ষের মধ্যে সুপ্ত জাতীয়তা বোধ জাগ্রত হতে শুরু করে । তখনই ভারতবর্ষের মানুষ জাতীয় পতাকার অভাব অনুভব করে। এই জাতীয় পতাকার ক্রমবিকাশের সূচনা হয় 1906 সালে স্বদেশী আন্দোলনের সময় কলকাতার পার্শিবাগান এর কাছে ডিয়ার পার্কে 1906 সালে 7 ই আগস্ট সর্বপ্রথম ভারতের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয় এর সম্বন্ধে এর চেয়ে বেশি সঠিক কোনো খবর পাওয়া যায়নি। এই পতাকাটি সমান্তরালভাবে লাল হলদে সবুজ রঙের কাপরে রচিত হয়েছিল ।এতে অঙ্কিত ছিল আটটি সাদা পদ্ম ফুল, "বন্দেমাতরম "শব্দ একটি সূর্য একটি অর্ধচন্দ্র। এই ভাবে সূচনা হলো আমাদের প্রথম জাতীয় পতাকা। ১৯০৬ সালে বিপ্লবী সংগঠন যুগান্তর সমিতি পার্টি কংগ্রেসে যে পতাকাটি প্রস্তাব করেছিল সেটি ছিল লাল রঙের। ঋষি অরবিন্দের ভাই বিপ্লবী বারীন্দ্র কুমার ঘোষ ও স্বামী বিবেকানন্দের ছোট ভাই ভূপেন্দ্র নাথ দত্তের প্রস্তাবিত পতাকাটি দেখতে ছিল তলোয়ার ও ত্রিশূলের গুনিতক আকার। উপরে চাঁদ ও নীচে চক্র। 1905 -1907 সালের মধ্যে ইউরোপে ভারতে স্বাধীনতাকামী বিপ্লবীরা যে দল গঠন করেন তাদের মধ্যে নেতা ছিলেন শ্যামাজি কৃষ্ণাবর্মা ও পার্সি মহিলা মাদাম ভিকাজি রুস্তম কামা। দেশের বাইরে প্রথম প্রস্তাবিত ও গৃহীত জাতীয় পতাকাটি উত্তোলন করেছিলেন এই ফরাসী নাগরিক মাদাম কামা। ১৯০৭ সালের ২২ অগস্ট জার্মানির স্টুর্টগার্ডে আর্ন্তজাতিক সমাজতান্ত্রিক সম্মেলনে ওই পতাকাটি উত্তোলিত এই পতাকাটা অনেকটা আগের মত ছিল। শুধুমাত্র পরিবর্তন ছিল একদম উপরের দিকে পদ্মের পরিবর্তে সাতটি নক্ষত্র। যা আমাদের সপ্ত ঋষি কে উদ্দেশ্যে করে এটা করা হয়েছিল। এবং সর্বনিম্ন এ বাম দিকে সূর্য ও ডান দিকে চন্দ্র ছিল। ১৯০৯ সালে ভগিনী নিবেদিতা প্রস্তাবিত জাতীয় পতাকাটি ছিল লাল রঙের। পতাকার মধ্যে বজ্র কুসুম দন্ড। তার মধ্যে লেখা বন্দেমাতরম। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় সেই পতাকাটির ছবি ছাপা হয়। যেহেতু দধিচির হাড় দিয়ে বজ্র তৈরি হয়েছিল তাই তিনি বজ্রকে ত্যাগের প্রতীক বলে মনে করতেন। আর ভারতবর্ষের মানুষের মন কসুমের মতো। এরপর জাতীয় পতাকার উদ্ভব হয় 1917 সালে। যখন অ্যানি বেসান্ট হোমরুল আন্দোলন শুরু করেন তখন পতাকার আকৃতিতে বেশ পরিবর্তন হল। এই জাতীয় পতাকার সমান্তরালভাবে পাঁচটি লাল ও চারটি সবুজ রঙের কাপড়ের টুকরো নিয়ে তৈরি হলো। পতাকার উপরের দিকে দিকে ছিল ব্রিটিশ "ইউনিয়ন জ্যাক"।এছাড়া এই পতাকাটা ছিল সাতটি তারা, ও একটি অর্ধচন্দ্র ও একটি তারা। হোমরুল আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের অধীনে স্বায়ত্তশাসন লাভ করা। যদিও এই ধারণাটির আয়ারল্যান্ড থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল এবং হোমরুল কথার মানে হচ্ছে "স্বায়ত্তশাসন "।সেই কারণেই জাতীয় পতাকা পরিকল্পিত হয়েছিল এই স্বায়ত্তশাসন এর অনুকরণে। কিন্তু জাতীয় পতাকার উপরে বাঁদিকে ইউনিয়ন জ্যাকেট থাকায় এই পতাকা কোন দিন জাতীয় পতাকা বলে দেশবাসী গ্রহণ করেনি ও হোমরুল আন্দোলন সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার পর জাতীয় পতাকা অস্তিত্ব বিপন্ন হয়ে ওঠে। 1920 সালে নাগপুর কংগ্রেস অধিবেশনে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে কংগ্রেসের অসহযোগ প্রস্তাব গৃহীত হয়। মহাত্মা গান্ধী হলেন অহিংস আন্দোলনের পূজারী ও অসহযোগ আন্দোলনের সেনাপতি। ভারতবর্ষে ফেরার পর তিনি প্রথম অবিংসবাদি নেতা যাহার ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষ এর আবাল-বৃদ্ধ-বণিতার মনে একটা আন্দোলনের সঞ্চার করেছিল তখনই গান্ধীজীএক জাতীয় পতাকার অভাব অনুভব করেন। 1921 সালে 13 ই এপ্রিল "নিউ ইন্ডিয়া " পত্রিকায় লেখেন " সমগ্র জাতির একটা পতাকা থাকা দরকার। লক্ষ লক্ষ লোক ইহার জন্য প্রাণ বিসর্জন করিয়াছে। এক প্রকারের পৌত্তলিকতার এ বিষয়ে সন্দেহ নেই। কিন্তু ইহার ধ্বংস করা পাপ, কারণ পতাকা আদর্শেরইয়ার বহুপূর্বে অন্ধ্রের মসলিপত্ত্নম এর এক যুবক পি ভেঙ্কাইয়া পতাকার গুরুত্ব অনুধাবন করে পুস্তিকা রচনা রচনা করেন। অবশেষে জলন্ধরে অধিবেশনে লালা হংসরাজ একদিন মহাত্মাজীর সঙ্গে পতাকার ব্যাপারে আলোচনা করেন ও জাতীয় পতাকার প্রস্তাবটি গ্রহণ করেন । সেই কারণেই বিজয়ওয়াড়া তে অনুষ্ঠিত নিখিল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস অধিবেশনে গান্ধীজী শ্রী ভেঙ্কাইয়া কে লাল (হিন্দুর সম্প্রদায়) সবুজ রং(মুসলমান সম্প্রদায়)এর পটভূমিকায় উপর পতাকা নির্মাণ করতে বলেন ও মাঝখানে চরকার চিহ্ন অংকন করে জাতীয় পতাকার রূপরেখা তৈরি করতে বললেন। ভেঙ্কাইয়া অতি উৎসাহে এই কার্য তিন ঘন্টার মধ্যে সম্পাদন করে গান্ধীজীর কাছে পরিকল্পনা দাখিল করেন। কিন্তু সময়ের অভাবে নিখিল ভারতীয় কংগ্রেস অধিবেশনে এই প্রস্তাবটি পেশ করা সম্ভবপর হয়নি। পরে গান্ধীজী তার মত পরিবর্তন করেন এবং সংখ্যালঘুদের জন্য তিনি লাল হলুদ ছাড়া সাদা রংটি যোগ করতে বলেন । এই সাদা অংশ ভারতীয় অন্যান্য সংখ্যালঘুদের জাতির প্রতীক। যদিও শিখ সম্পদে এই পতাকার রং নিয়ে বিরোধিতা করেছিল। এইভাবে ভারতীয় ত্রিবর্ণ পতাকা জন্ম ইতিহাস শুরু হলো। ।" জাতীয় পতাকায় অঙ্কিত তিনটি বর্ণের সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা থাকলেও গান্ধী সত্য শান্তি ও অহিংসার কথা এই তিন বর্ণের মাধ্যমে প্রচার করতে শুরু করলেন। ভারতের জাতীয় পতাকা ইতিহাসে নাগপুর পতাকা সত্যাগ্রহ ইতিহাস এক স্মরণীয় অধ্যায় ।1923 সালে 1 লা মে 144 ধারা অনুযায়ী ঘোষণা করা হয় পতাকার নিয়ে রাস্তায় ভ্রমণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এর প্রতিবাদে শুরু হয় নাগপুর সত্যাগ্রহ। হাজার হাজার সত্যাগ্রহী এই আন্দোলনে র শামিল হয়।শুধু এই আন্দোলন নাগপুরের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকেনা ভারতবর্ষে বিভিন্ন প্রান্তে এই আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে। মহিলা কর্মীদের মধ্যে সর্বপ্রথম শ্রীযুক্তা সুভদ্রা দেবী প্রথম আদেশ অমান্য করিয়া রাস্তায় পতাকা হস্তে যাবার সময় তিনি গ্রেফতার হন। প্রথমদিকে মহাত্মা গান্ধীর অনুমোদন পাওয়া সত্ত্বেও জাতীয়তা কংগ্রেস অনেক দিন ধরে এই পতাকাকে জাতীয় পতাকা হিসেবে গ্রহণ করেনি। যদিও সরকারীভাবে গৃহীত না হলেও সর্বভারতীয় সত্যাগ্রহ ও অসহযোগ আন্দোলনে এই পতাকায় তখন ব্যবহৃত হয়েছে। 1929 সালের লাহোর কংগ্রেসের অধিবেশনে পূর্ণ স্বরাজের প্রস্তাব গৃহীত হয় তখন এই পতাকা উত্তোলন করা হয়েছিল এরপর 1931 সালে করাচি শহরে এ-আই -সি এর অধিবেশনে জাতীয় পতাকা পরিকল্পনার র্প্রয়োজন সম্বন্ধে একটি প্রস্তাব গৃহীত হয় এই প্রস্তাব কার্যকরী করার জন্য একটি কমিটি গঠিত হয় । এই কমিটি নানা জল্পনা-কল্পনার পর সামান্য পরিবর্তন ও পরিমার্জন করে উক্ত পতাকা জাতীয় পতাকা হিসেবে গ্রহণের প্রস্তাব দেয়। এই নতুন পরিকল্পনা অনুযায়ী পতাকাটিকে পূর্বের ন্যায় তিনটি বর্ণের সমাবেশ থাকলে বটে, তবে বর্ণ তিনটি হইলো উপর হতে নিচে যথাক্রমে জাফরান, সাদা ও সবুজ। সাদা অংশ এর মধ্যে শোভা পেলো একটি চরকা। বিভিন্ন গুণাবলীর পরিচায়ক , সম্প্রদায়ের নহে। বোম্বাইতে ওই সময় ( 6,7,8 থ আগস্ট) নিখিল ভারতের রাষ্ট্রীয় সমিতির অধিবেশন হয়। উক্ত সমিতির বিচার বিবেচনার পর ওয়ার্কিং কমিটির সুপারিশ গ্রহণ করে পতাকার রূপদানের বিষয়ে অনেক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সিদ্ধান্ত গুলি হল যে- "জাতীয় পতাকাটি ত্রিবর্ণ রঞ্জিত হইবে। বর্ণ তিনটি পূর্বের ন্যায় সমান্তরালভাবে সজ্জিত থাকিবে। উপর হতে নিচে যথাক্রমে থাকিবে জাফরান সাদা সবুজ রং। সাদা অংশের কেন্দ্রস্থলে শোভা পাবে গারো নীল বর্ণের একটি চরকা। বর্ণগুলির কোনো সম্প্রদায়গত অর্থ থাকবে না। জাফরান রঙের অর্থ হইবে সাহস ও ত্যাগ, সাদার অর্থ শান্তি ও সত্য, এবং সবুজ বুঝাইবে বিশ্বাস ও শৌর্য; চরকা হইবে জনসাধারণের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতীক। পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দ্বিগুণ লম্বা হইবে " এরপরে নিখিল ভারত রাষ্ট্রীয় সমিতি তার প্রস্তাব গ্রহণ করলেন 30 শে আগস্ট।তাদের প্রস্তাবে প্রতি মাসের শেষ রবিবার পতাকা দিবস হিসেবে পালন করা হয় পরবর্তীকালে কংগ্রেস নির্ধারিত এই পতাকাই ভারতবর্ষে জাতীয় পতাকা বলে স্বীকৃত হয় । এই জাতীয় পতাকার সঞ্জীবনী মন্ত্র এর মাধ্যমে মৃতপ্রায় ভারতবাসীর অন্তরে ম্রিয়মাণ জাতীয়তাবাদের দীপশিখা কে জাগিয়ে তুলল । দেশকে ব্রিটিশ শাসনের করায়ত্ত থেকে মুক্তির আহবানে দলে দলে বীর স্বেচ্ছাসেবক ও সৈনিকরা জাতীয় পতাকার তলায় দাঁড়িয়ে মৃত্যুর আহবানের দিকে পা বাড়িয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। 1947 সালের 22 শে জুলাই ভারতীয় গণপরিষদের অধিবেশনে স্বাধীন ভারতের জাতীয় পতাকা কিরূপ হওয়া উচিত সে সম্পর্কে একটা আলোচনা হয়। পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর গণপরিষদে জাতীয় পতাকা সম্পর্কে কতকগুলি প্রস্তাব উত্থাপিত করেন। সমান্তরালভাবে সজ্জিত গাঢ় জাফরান সাদা ও সবুজ তিনটি বর্ণের সমন্বয় ভারতের জাতীয় পতাকা তৈরি হবে। সাদা অংশের কেন্দ্রস্থলে চরকার প্রতীক হিসেবে নীল রংয়ের চক্র। চক্র সারনাথ অশোক স্তম্ভের উপর অঙ্কিত অশোক চক্রের অনুরূপ এবং ইহার ব্যাস হইবে পতাকার সাদা অংশের প্রস্থের সমান। পতাকার দৈর্ঘ্য ও প্রস্থের দেড় গুণ হবে। এই প্রস্তাবে পরিকল্পিত জাতীয় পতাকা কংগ্রেস কর্তৃক গৃহীত জাতীয় পতাকার অনুরূপ পার্থক্যের মধ্যে সাদা অংশের চরকা স্থানে চরকাই হলো প্রতীক হিসেবে অশোক চক্র স্থান দেওয়া। পন্ডিত জহরলাল নেহেরু এই পতাকা সম্বন্ধে বলেন যে এই পতাকা জনসাধারণের স্বীকৃতি ও সার্বজনীন ব্যবহারের এবং সর্বোপরি পতাকার মর্যাদা রক্ষার জন্য দেশপ্রেমিকদের আত্ম বলি। তাই তিনি এও বলেন যে এই জনমত কি তারা সমর্থন করে এই পতাকা রূপ দিয়েছেন কেউ কেউ পতাকা কি তিনটি বিশেষ বিশেষ সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠা করেছেন কিন্তু পতাকা উদ্ভাবনের সময় এর পেছনে কোন সাম্প্রদায়িক ব্যাখ্যা ছিল না। 1947 সালের 15 ই আগস্ট ব্রিটিশ গভর্নমেন্ট ভারতবাসীদের নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করেন। অপূর্ব উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে সরকারি আবাস ও ভবনসমূহে , প্রতি গৃহে এবং অগণিত শোভাযাত্রার নতুনভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে আপামর ভারতবাসী স্বাধীনতা দিবস পালন করে ।পন্ডিত জহরলাল নেহেরুর দিল্লির লালকেল্লা থেকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে সুভাষচন্দ্রের স্বপ্ন সাধনা কে জয়যুক্ত করে তোলেন। জাতি বর্ণ নির্বিশেষে পুরাতন দ্বন্দ্ব-কলহ বিস্মিত হইয়া আনন্দ উৎসবের মধ্য দিয়ে নব্য লব্ধ স্বাধীনতাকে স্বাগতম জানায়।